প্রসঙ্গঃ চাচা আবু তালেব ও বিবি খাদিজা (رضي الله عنهما)-এঁর ইন্তিকাল, ঐ বৎসরকে শোকের বৎসর ঘোষণা
========
নবী করিম [ﷺ]-এঁর বয়স যখন ৪৯ বৎসর আট মাস এগার দিন, তখন ছিল রমযান মাসের ২৩ তারিখ। ঐ তারিখেই নবী করিম [ﷺ]-এঁর প্রতিপালনকারী চাচা আবু তালেব ইনতিকাল করেন। এর পাঁচ দিন পর অর্থাৎ রমযানের ২৮ তারিখে হুযুর [ﷺ]-এঁর সুখ-দুঃখের জীবনসঙ্গিনী বিবি খাদিজা (رضي الله عنهما)-ও জান্নাতবাসিনী হয়ে যান। জীবনের সবচেয়ে আপনজন হিসাবে বিবি খাদিজা (رضي الله عنهما) ও চাচা আবু তালেবের ইনতিকালে নবী করিম [ﷺ] এতই শোকাভিভূত হয়ে পড়েন যে, তিনি ঐ সনের পূর্ণ বছরকে শোকের বছর বলে ঘোষণা করেন। কোরআন এবং হাদিস অনুসারে কোন প্রিয়জনের বিয়োগে তিনদিনের বেশি শোকপালন করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। কিন্তু নবীজীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়। তিনি তাঁর সবচেয়ে আপনজনদের জন্য পুরো বছরকে শোকের বছর বলে অভিহিত করেছেন।
বিবি খাদিজা (رضي الله عنهما) মাল, দৌলত ও শান্তনা দিয়ে নবী করিম [ﷺ]-কে সবসময় চাঙ্গা করে রাখতেন। আবু তালেবের সমর্থনের কারণে কুরাইশরা নবী করিম [ﷺ]-কে চরম আঘাত করতে এতদিন সাহস পায়নি। তাঁদেরকে হারিয়ে নবী করিম [ﷺ] শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন। কাফেরদের অত্যাচারের সকল বাধাই এবার দূর হয়ে গেলো।
বিবি খাদিজার (رضي الله عنهما) ইনতিকালের পর নবী করিম [ﷺ] হযরত বিবি সওদা বিনতে জামআ ((رضي الله عنه) আনহা) কে তাঁর বৃদ্ধা বয়সে বিবাহ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি আল্লাহর নির্দেশে হযরত আবু বকরের ৬ বৎসরের শিশুকন্যা হযরত আয়েশা (رضي الله عنهما)-কে বিবাহ করেন। ৫১ বছর বয়সে ৬ বৎসরের কিশোরীকে বিবাহ করার মধ্যে নিশ্চয়ই জৈবিক কোন কারণ ছিলনা। হুযুর [ﷺ]-এঁর বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল খোদায়ী নির্দেশের বাস্তবায়ন। হযরত দাউদ (عليه السلام)-এঁর একশত বিবাহ ও হযরত সোলায়মান (عليه السلام)-এঁর এক হাজার বিবাহের তুলনায় আমাদের প্রিয় নবীর [ﷺ] ১১ বিবাহ ছিল খুবই সীমিত। সুতরাং ইহুদী ও খৃষ্টান লেখকদের অপবাদ আমাদের নবীর উপরে নয় - বরং তাদের নবীদের উপরেই প্রথমে বর্তায়। ক্ন্তি মুসলমানদের বিশ্বাস - নবীগণ আল্লাহর নির্দেশেই সবকিছু করেন।
এর কিছুদিন পরেই তিনি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আপন পালিত পুত্র যায়েদ ইবনে হারেছা (رضي الله عنه)-কে সাথে নিয়ে দুধ মাতার দেশ তায়েফ গমন করেন।
No comments: